মেয়েকে ধর্ষণের ‘মামলা তুলে না নেয়ায়’ বাবাকে হত্যা
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১৬-০৩-২০২৫ ০২:৫৯:৫৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৬-০৩-২০২৫ ০২:৫৯:৫৫ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
বরগুনায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন বাবা। এরপর সেই মামলা তুলে না নেয়ায় বাবাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের। আর এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ। নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে, ধর্ষণ মামলায় একমাত্র অভিযুক্ত সীজিব চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত আসামিদের মধ্যে সীজিবের বাবা শ্রী রাম চন্দ্র রায়, স্থানীয় অধিবাসী মো. আসলাম ওরফে কালু এবং মো. রফিকুল ইসলামকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।
পুলিশ বলেছে, ঘটনাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে মাঠে কাজ করছে পুলিশের একাধিক টিম। ঘটনাটির তদন্ত শেষ করতে সময় প্রয়োজন বলে জানান বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান জগলুল হাসান।
গত ১১ মার্চ দিনগত রাতে বরগুনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কালিবাড়ী এলাকার নিজ ঘরের পাশ থেকে মেয়েকে ধর্ষণ মামলার বাদী বাবার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে ৫ মার্চ মেয়েকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন তিনি। ওইদিনই এ মামলার একমাত্র আসামি সীজিব চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নিহতের স্ত্রীর অভিযোগ, মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করার কারণে তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী ধর্ষণ মামলা দায়ের করার পর থেকেই ধর্ষণ মামলার আসামির স্বজনরা আমাদের মামলা তুলে নিতে অনবরত হুমকি দিতে থাকে। আমার স্বামী মামলা তুলে না নেয়ায় সুকৌশলে আসামির স্বজনরা খুন করে বাড়ির পাশে ফেলে যায়। এখন আমিও আতংকে দিন কাটাচ্ছি।’
নিহতের বোন বলেন, ‘অপহরণের পর আমার ভাইয়ের মেয়েকে ধর্ষণ করে সীজিব চন্দ্র রায়। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর সীজিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকেই সীজিবের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে আমার ভাইয়ের প্রতি অনবরত চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন সীজিবের বাবা শ্রী রাম চন্দ্র রায়। বিষয়টা স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করতে তিনি বিভিন্ন জায়গায় আলাপ-আলোচনা শুরু করেন।’ স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান না করলে আমার ভাইকে দেখিয়ে দেয়ার হুমকিও দেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাইয়ের কোনো শত্রু নেই। মেয়েকে ধর্ষণের মামলা দায়ের করার পর থেকে অভিযুক্ত ও তার স্বজনদের সাথে শত্রুতা তৈরি হয়।’
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ‘আমাদের ধারণা ধর্ষণ মামলার বাদীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। বিষয়টা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘মামলাটি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তাই মামলার তদন্ত শেষ করতে সময় প্রয়োজন।’
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স